বিধানসভা নির্বাচনের আগে কলকাতা পুরভোটের সম্ভাবনা কার্যত শূন্য। একদিকে সুপ্রিম কোর্টে ঝুলে থাকা মামলা, অন্যদিকে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন এগিয়ে আসা, জোড়া প্রাচীরের ধাক্কায় রাজ্য সরকারের পূর্ব প্রস্তাব মেনে মার্চে আর হচ্ছে না পুরভোট। কারণ, আইন শৃঙ্খলা ও প্রশাসন পুরোটাই ওই সময়ে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকায় কর্পোরেশন ভোট করার জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশন পুলিশ বা ভোটকর্মী কিছুই পাবে না।
কেন্দ্রীয় কমিশন যদি ফেব্রুয়ারিতে বিধানসভা ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করে তবে মার্চে যে কলকাতা নগর নিগমের ভোটগ্রহণ করা যাবে না বৃহস্পতিবার তা স্বীকার করে নিয়েছেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও। পুরমন্ত্রীর বক্তব্য, “বিধানসভা ভোটের নির্বাচনী বিজ্ঞপ্তি জারি করা মাত্র কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন রাজ্যের পুলিশ ও প্রশাসন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করবে। শহরে পুরভোট করতে রাজ্য নির্বাচন কমিশন তখন কিছুই হাতে পাবে না। আমরাও সবাই তখন বিধানসভা ভোটের লড়াইয়ে পুরোদস্তুর নেমে পড়ব।” পুরভোট না করলে ফিরহাদদের সরিয়ে আদালত নিযুক্ত প্রশাসক বসানোর হুমকি দিতেই রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে গত ডিসেম্বরে জানিয়েছিল, নতুন ভোটার লিস্ট নিয়েই ওয়ার্ড বিন্যাস শেষেই আগামী ২১ মার্চ কলকাতায় পুরনির্বাচন করতে প্রস্তুত তাঁরা।
রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, বিধানসভা ভোট এগিয়ে আসায় উদ্ভূত সাংবিধানিক সংকটের জেরে আগামী জুলাই বা আগস্ট মাসের আগে আপাতত কলকাতা বা রাজ্যের অন্য পুরসভাগুলিতেও নির্বাচন হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। আর যে দল বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে নবান্নের দায়িত্ব নেবে তাঁরাই কলকাতা, হাওড়া, শিলিগুড়ি-সহ রাজ্যে ১১২টি পুরসভার সিংহভাগের দখল পাবে। উপনির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন দু’দিনের কলকাতা সফরে এসে মার্চ-এপ্রিল মাসে ভোটের ইঙ্গিত দেওয়ায় মহানগরের প্রাক্তন ও হবু কাউন্সিলররা কার্যত মুষড়ে পড়েছেন। কারণ, এক বছর হল কাউন্সিলর প্যাড হাতে নেই, ওয়ার্ড-কো অডিনেটর পদটি সব কাজে শক্তপোক্ত নয়। অন্তত আরও চার মাস পুরভোট পিছিয়ে যাওয়ায় অনিশ্চিত হল দলের টিকিট পাওয়া। শীর্ষ কোর্টে মামলার জেরে রাজ্য সরকার মার্চে পুরভোট চেয়েছিল, কিন্তু কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট করে দিয়েছে ৪ মে সিবিএসই পরীক্ষা শুরুর আগে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের প্রক্রিয়া শেষ করা হবে। বিধানসভা ভোট যদি এপ্রিলের মধ্যে শেষ হয় তাহলে মে-জুন মাসে পরীক্ষার জন্য পুরভোট সম্ভব নয়।
Leave a Reply