Soumitra Chatterjee-Image Bengal

বাংলা তথা ভারতীয় চলচিত্র জগতে নক্ষত্র পতন। প্রয়াত হলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। রবিবার বেলা ১২:১৫ নাগাদ প্রয়াত হব তিনি।

 

করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ৬ অক্টোবর থেকে কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এই বর্ষীয়ান অভিনেতা। করোনা থেকে সেরে উঠলেও অন্যান্য শারীরিক সমস্যার জন্য তাঁর শরীর ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। করোনার সংক্রমণ থেকে মুক্তির পর চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন যে, তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উন্নতির দিকে যাচ্ছিল। কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি হাঁটতে পারবেন বলে আশ্বস্ত করেছিলেন তাঁরা। যদিও ২৫ অক্টোবর চিকিৎসক অরিন্দম কর, যিনি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান তিনি জানান, অভিনেতার শারীরিক পরিস্থিতি ভালো নেই। তাঁর জ্ঞান ফিরছে না এবং চেতনাস্তর অত্যন্ত নীচে নেমে গিয়েছে। চিকিৎসকদের সব রকম চেষ্টার পরেও অভিনেতার শারীরিক পরিস্থিতির কোনও উন্নতি দেখতে পাচ্ছেন না তাঁরা। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকেই তাঁর কিডনির পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করে। তখন থেকেই তাঁকে ডায়ালিসিস করানো শুরু হয়। গত বৃহস্পতিবার সফল ভাবে সেরে ফেলা হয় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের রক্ত থেকে প্লাজমা-শোধনের কাজ। বৃহস্পতিবার চিকিৎসকরা জানান, এ দিন প্রথম প্লাজমাফেরেসিসের পর অশীতিপর অভিনেতার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীলই আছে। প্লাজমাফেরেসিসের সময় কোনও সমস্যা না-হলেও বিকেলের দিকে তাঁর হৃদস্পন্দন আচমকা অনিয়মিত হয়ে পড়ে এবং তখনই কিছুক্ষণের জন্য তাঁর সামগ্রিক শারীরিক অবস্থা বেশ অস্থির হয়ে পড়ে। ২০০৯ সালে তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত হন। চিকিৎসার জন্য বিদেশেও যান।

 

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই শোকের ছায়া নেমে আসে চলচিত্র মহলে।  বর্ষীয়ান এই অভিনেতার মৃত্যুতে চলচিত্র জগতে বিরাট শূন্যতা সৃষ্টি হল তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

 

১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারী কৃষ্ণনগরে জন্মগ্রহন করেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ১৯৫৯ সালে চলচিত্রে পদার্পন সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরে অপুর সংসার ছবির মাধ্যমে। তারপর সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় অভিযান, চারুলতা, অশনি সংকেত,  অরন্যের দিনরাত্রি, সোনার কেল্লা, হীরক রাজার দেশে, শাখা প্রশাখা, জয় বাবা ফেলুনাথ, গণশত্রু মতো ছবিতে তাঁর অভিনয় চিরকাল মনে রাখবে বাংলা তথা বিশ্ব চলচিত্রের আপামর দর্শক।

 

তাঁর অভিনীত অন্যান্য অসাধারন ছবির মধ্যে আতঙ্ক, গণদেবতা, সংসার সীমান্তে, অতল জলের আহবান, সাত পাকে বাঁধা, ঝিন্দের বন্দী উল্লেখযোগ্য। সিনেমায় অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি ছিলেন নাট্যকার ও পরিচালক। তাঁর অভিনীত ও পরিচালিত নাটক গুলির মধ্যে ‘হোমাপাখি’, ‘তৃতীয় অঙ্ক অতএব’, ‘রাজা লিয়ার’, ‘ফেরা’, ‘টিকটিকি’, ‘আত্মকথা’ দর্শকদের স্মৃতিতে চিরদিন থাকবে। 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published.