শনিবার সকালে আচমকাই হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে কার্নিশে চলে আসেন ওই রোগী। তারপর ঝাঁপ মারার চেষ্টা করতে থাকেন তিনি। খবর যায় দমকলে। আসে পুলিশও। দমকল, হাসপাতাল কর্মীরা তাঁকে কার্নিশ থেকে ফেরাতে বহু চেষ্টা করেন। কিন্তু, সুজিত অনড় ছিলেন। উল্টে কেউ কাছে এলেই ঝাঁপিয়ে নীচে পড়ার হুমকি দিতে থাকেন। এভাবেই কেটে যায় প্রায় ঘন্টা দেড়েক।মল্লিকবাজারের বেসরকারি হাসপাতালের আট তলার কার্নিশ থেকে যে রোগী পড়ে যান, তাঁর নাম সুজিত অধিকারী। সঙ্কটজনক ছিলেন। তাও চেষ্টা করেছিলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু, শেষ রক্ষা হল না। মৃত্যই হল মল্লিকবাজারের ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সের ৮তলা থেকে নীচে পড়ে যাওয়া রোগী সুজিত অধিকারীর। ঘটনার প্রায় ৫ ঘন্টা পর শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন লেকটাউনের বাসিন্দা সুজিত।

তাঁরই সম্পর্কিত ভাই সুভাষ দাস বলেন, ‘‘ও আমার মামাতো দাদা হয়। দাদাকে দু’দিন আগেই হাসপাতালে ভর্তি করি। খিঁচুনির সমস্যা ছিল। ডাক্তারের পরামর্শ মেনেই আমরা হাসপাতালে ভর্তি করি।’’ এর পরই তিনি জানান, এক মাস আগেই ওই যুবকের স্ত্রীর মৃত্যু হয়। ব্লাড ক্যানসারে ভুগছিলেন তাঁর স্ত্রী। তা হলে কি স্ত্রীর শোকেই এমন অবস্থা? যদিও এ বিষয়ে কোনও উত্তর মেলেনি।

বাড়িতেও আগে সুজিত এমন ‘অস্বাভাবিক’ কোনও আচরণ করেননি বলেই দাবি করেছেন তাঁর ভাই সুভাষ। সুজিতের বাড়ি দক্ষিণদাঁড়ি এলাকায়। বাড়িতে বর্তমানে মা রয়েছেন। শনি বা রবিবারই তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হত বলে জানিয়েছেন সুভাষ।
সন্ধ্যায় আইএনকে-র তরফে ডাঃ অভীক রায়চৌধুরী, সিইও ডাঃ জয়ীতা বসু ও সিইও অর্পিতা মণ্ডল দাবি করেছিলেন, রোগী কার্নিশে উঠে বারবারই ঝাঁপ মারার হুমকি দিচ্ছিলেন। তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টায় কোনও খামতি ছিল না। রোগী সুজিত অধিকারী নাকি বেশ কয়েকবার টাকা পয়সার কথা বলেছিলেন বলেও জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে তাঁর চিকিৎসা মেডিক্লেম পেমেন্টে হওয়ায় সেসবের কোনও অসুবিধা ছিল না বলে দাবি ছিল কর্তৃপক্ষের। কেন এমন ঘটালেন ওই রোগী? সেটা এখনও সবার কাছেই ধোঁয়াশা।

এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়া হবে এবং অভ্যন্তরীণ তদন্ত হবে বলেও জানিয়েছে আইএনকে কর্তৃপক্ষ। এদিন ঘটনার পর পরই স্বাস্থ্য দফতর নার্সিংহোমের থেকে রিপোর্ট তলব করেছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published.