দেশজুড়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। তৃতীয় ঢেউয়ে টালমাটাল রাজ্য। এর মাঝেই পাঁচ রাজ্যে ভোট। ২২ জানুয়ারি বাংলায় ৪টি পুরভোট রয়েছে। চিকিৎসক ও বিরোধীদের একাংশ চাইছে পুরভোট পিছিয়ে দেওয়া হোক। বিষয়টি নিয়ে আদালত পর্যন্ত জল গড়িয়েছে। এরই মাঝে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “আমার ব্যক্তিগত মত, আগামী দু’মাস সব কর্মসূচি বন্ধ রাখা হোক। ভোট পরেও করা যাবে। মানুষ বাঁচলে, আমরা বাঁচব।”

আগামী দুই মাস কোনও নির্বাচন হওয়া উচিত নয়, এমনটাই ব্যক্তিগত ভাবে মনে করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শনিবার নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে কোভিড পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে একটি বৈঠক করেন সাংসদ অভিষেক। তার পর বলেন, ‘‘কোভিড পরিস্থিতিতে আগামী দু’মাস সব কিছু বন্ধ রাখা উচিত। নির্বাচন বন্ধ রাখা উচিত। এটা আমার ব্যক্তিগত মত।’’

বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘‘২ জানুয়ারির রাজ্য কোভিড বুলেটিন অনুযায়ী, ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে করোনার দৈনিক সংক্রমণের হার ছিল প্রায় ২৪ শতাংশ। কিন্তু শুক্রবারের বুলেটিন অনুযায়ী সংক্রমণের হার কমে হয়েছে ৯.৫ শতাংশ। সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের কম হলে পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হবে।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘আগামী ২ মাসে ডায়মন্ড হারবার কোনও রাজনৈতিক সমাবেশ করা যাবে না। করা যাবে না কোনও পুজো বা ধর্মীয় সমাবেশও। করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে প্রতিটি ওয়ার্ড এবং পঞ্চায়েত একটি করে কন্ট্রোল রুম খোলা হবে।’’
সাংসদ বলেন, “পাঁচ রাজ্যে ভোট আছে। কিন্তু পজিটিভিটি রেট বাড়ছে। মানুষ বাঁচলে, আমরা বাঁচব। রাজনৈতিক লড়াই তো থাকবেই।” একইসঙ্গে নিজের সংসদীয় এলাকায় আগামী দু’মাস সমস্ত ধরনের জমায়েত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলেন অভিষেক।

নিজের সংসদীয় এলাকার জন্য এদিন সাংসদ নির্দেশ দেন- ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ডায়মন্ড হারবার এলাকায় কোনও রকম জমায়েত চলবে না। শুধু রাজনৈতিক জমায়েত নয়, করা যাবে না বড় কোনও পুজো বা ধর্মীয় জমায়েতও।

বাজারে ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের দুটো করে মাস্ক পরতেই হবে। প্রত্যেক বিক্রেতাকে সাতদিন পর্যবেক্ষণ করা হবে। তার পরেও নিয়ম না মানলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাপিড টেস্টে জোর দিয়েছেন সাংসদ। প্রয়োজবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রাপিড টেস্ট করা হবে। প্রতি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ওয়ার্ডে খোলা হবে কন্ট্রোল রুম। ফোন করলেই মিলবে চিকিৎসক। ডক্টরস অন হুইলের পরামর্শ দিলেন সাংসদ।

পরিশেষে সাংসদের পরামর্শ, “করোনা যায়নি। বারবার রূপ বদল করছে। ভবিষ্যতেও করবে। তাই আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই। সতর্ক থাকতে হবে। তবে সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে হবে, না হলে প্রশাসন কিছু করতে পারবে না।”

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published.