নাট্যমোদী দর্শকদের কাছে দুঃসংবাদ। প্রয়াত হয়েছেন বাংলা থিয়েটারের বর্ষীয়ান অভিনেত্রী স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। বুধবার দুপুর নাগাদ হাসপাতালেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে জানা গিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। ডায়ালিসিস চলছিল তাঁর। এমনকি ২১ দিন আইসিইউতেও ভর্তি ছিলেন স্বাতীলেখা। চলতি বছর ২২ মে ৭১-এ পা দিয়েছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। মঞ্চ দাপিয়ে বেড়ানো সেই অভিনেত্রীর পথ চলা থমকে গেল বুধবার। চলে গেলেন সত্যজিৎ রায়ের ‘বিমলা’।
[ অবশ্যই পড়ুন – করোনা ভ্যাকসিনে জোর দিতে রাজ্যের নতুন CVR অ্যাপ ]
১৯৮৪ সালে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পর্দায় অভিনয়ের যাত্রা শুরু স্বাতীলেখার। সত্যজিৎ রায়ের বিখ্যাত ছবি ‘ঘরে বাইরে’-র ‘বিমলা’ অভিনয় নিয়ে আজও প্রশংসায় পঞ্চমুখ বাংলা ছবির দর্শক। সেই থেকে সৌমিত্র ও স্বাতীলেখার জুটিকে পছন্দ করেছিলেন অনুরাগীরা। কিন্তু তার পরে মঞ্চের বাইরে দেখা যায়নি তাঁকে। দীর্ঘ ৩১ বছর পরে সৌমিত্রর সঙ্গেই পর্দায় ফিরলেন তিনি। প্রযোজক-পরিচালক নন্দিতা রায় ও শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে বড় পর্দায় দেখা যায় তাঁকে। ‘বেলা শেষে’-তে সৌমিত্র-স্বাতীলেখার রসায়ন দেখে আপ্লুত দর্শকদের জন্য ফের ‘বেলাশুরু’-তে অভিনয় করেন তাঁরা। কিন্তু ছবি মু্ক্তি পাওয়ার আগেই চলে গেলেন নায়ক-নায়িকা। গত বছর নভেম্বর মাসে মৃত্যু হয় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের। বুধবার চলে গেলেন স্বাতীলেখাও।
[ অবশ্যই পড়ুন – করোনার কারণে এই বছরও হজ যাত্রা বাতিল ভারতীয়দের ]
১৯৫০ সালে ২২ মে এলাহাবাদে জন্মগ্রহণ করেন স্বাতীলেখা। ছোট থেকেই সাংস্কৃতিক পরিবেশে বড় হয়েছেন তিনি। এলাহাবাদে থাকাকালীন যুক্ত হোন থিয়েটারে। ১৯৭৮ সালে যুক্ত হোন নান্দীকারে। নান্দীকার প্রযোজিত ফেরিওয়ালার মৃত্যু, শানু রায় চৌধুরী, অজ্ঞাতবাস, সোজন বাদিয়ার ঘাট, নাচনী নাটকে তাঁর অসাধারণ অভিনয়ে মুগ্ধ হয়েছে নাট্যমোদী দর্শক। বাংলা থিয়েটারে অসামান্য অবদানের জন্য ২০১১ সালে পান সঙ্গীত নাটক একাডেমী পুরস্কার। পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমি পুরস্কার সহ বহু পুরস্কার ভূষিত হয়েছেন বাংলা এই বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত মৃত্যুতে বাংলা থিয়েটারে এক অপার শূন্যতা তৈরী হলো।
Leave a Reply